মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

রানীশংকৈলে ভাঙ্গা ব্রীজের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল হাজারো মানুষের

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। এটি উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের বাজেবকসা গ্রামে অবস্থিত। রাস্তায় যাতায়াতকারী যানবাহন ও এলাকাবাসীর জন্য এটি যেন একটি মরণ ফাঁদ। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দূর্ঘটনা, হতে পারে প্রাণহানি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাধীন রানীশংকৈল-মীরডাঙ্গী থেকে ঐতিহ্যবাহী কাতিহার হাট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক। শুধু মাত্র এই জরাজীর্ণ সেতুটির কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে এ সড়ক। যার কারণে সড়কটিতে ভারি কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। হালকা যানবাহনও চলছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গা ব্রীজ অবস্থায় পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষ সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রীজটির মধ্যখানে ছাদের বড় অংশ ভেঙে পড়ে আছে। ভেঙে যাওয়া অংশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী। শুধু ভেঙ্গে যাওয়া অংশই নয় পুরো ব্রীজটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। ব্রীজটির এই দশার কারণে এখন আর কোন বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার যাতায়াত করতে পারছে না। অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি, রিকশা, নছিমন, করিমনসহ ছোট ছোট যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজ পার হচ্ছে। এতে যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, মীরডাঙ্গী হতে কাতিহারহাট সড়কের বাকসা সুন্দরপুর এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা সড়কের এই ব্রীজটি দুই ধাপে ভেঙ্গে পাথরের ঢালাই উঠে খাল হয়ে প্রায় দুই ফিট করে দুই স্থানের রড বেরিয়ে পড়েছে। ব্রীজের ওপর দিয়ে সাইকেল মোটরসাইকেল দেখে শুনে চলাচল করা গেলেও রাতের আঁধারে অচেনা গাড়িচালক পথচারীরা পড়ে যেতে পারে বিপদে। এ রাস্তা ধরেই শিক্ষার্থীদের আশপাশের স্কুল-কলেজে যেতে হয়। হাটবাজারে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে হয়। যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার ভাঙ্গা ব্রীজের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। প্রাণঘাতী দূর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্রীজ সংস্কারের দাবি জানান তারা।

জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে কয়েকধাপে মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহারহাট পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। পাকা সড়ক নির্মাণের পর থেকেই সড়কটিতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় মানুষসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ব্যাপকভাবে বেড়ে ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়ে পড়ে। তবে নতুন সড়ক নির্মাণের সময়েও বহু পুরোনো এই ব্রীজ নিয়ে বর্তমানে দূর্ভোগে রয়েছে পথচারীসহ স্থানীয়রা।

স্থানীয় কালি, লিটন, ফরিদা বলেন, ব্রীজটি দেশ স্বাধীনের আগে নির্মাণ হতে পারে। কারণ ছোট থেকেই এটি আমরা দেখে আসছি। সেতুটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। তবে একদিকে সংস্কার করার বছর না ঘুরতে আরেক দিকে ধ্বসে সেতুর রড বেরিয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় কৃষক, শ্রমিক, যানবাহন চালকসহ পথচারীরা।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস বলছে, মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহার সড়কটি আমাদের উপজেলা সড়ক ক্যাটাগরিতে পড়ে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কের মধ্যে থাকা পুরোনো ব্রীজটি এরই মধ্যে দুবার সংস্কার করা হয়েছে। তাছাড়াও নতুন করে নির্মাণ করার জন্য একাধিকবার বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দসহ টেন্ডার হলেই সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, খুব শিগগির সেতুটি পুন:নির্মাণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com